ওজন নিয়ে বিপাকে? বাড়তি ওজন সাথে করে যেন ডেকে নিয়ে আসে হাজারটা বিপদ!
ওবেসিটি আর ডায়াবেটিস প্রায় হাত ধরাধরি করে চলে, আর ডায়াবেটিসের সঙ্গে আসে আরও হাজারো অসুখ৷ কেবল দেখতে ভালো লাগার জন্য নয়, শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্যও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা বাধ্যতামূলক৷
তাইতো শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে কেউ কেউ খাওয়া-দাওয়াই কমিয়ে দিয়েছেন। মেনে চলছেন অনেক বিধি-নিষেধ। তারপরও কমছে না ওজন! তবে প্রতিদিনের খাবার সম্পর্কে একটু সচেতন থাকলেই শরীরে বাড়তি মেদ আর জমবে না। দ্রুত শরীরের ওজন কমাতে ফলের বিকল্প নেই।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, “এখন বাজার ভরা ফলে। শক্তি আর পুষ্টির অসাধারণ উৎস। এই ফল দিয়েই যদি ডায়েট করা যায়, তাহলে সহজে ওজন কমবে, শরীরও সুস্থ থাকবে।”
ফল হলো ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, শূন্য ফ্যাট এবং অন্যান্য দারুণ সব পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একমাত্র প্রাকৃতিক স্ন্যাকস যা সুষম পুষ্টি সরবরাহের সাথে সাথে ওজন নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে! এখানে তেমন ১৭টি ফলের তালিকা দেওয়া হলো যেগুলির পুষ্টিগুণ বাড়তি মেদ থেকে আপনাকে দিবে মুক্তি খুব সহজেই!
আপেল : আপেলের পেকটিন ফাইবার পেট ভরানোর পাশাপাশি দেহে মেদের পরিমাণও কমাবে। ভারী খাবার খাওয়ার আগে আপেল খাওয়া তাই উপকারী।
তরমুজ : তরমুজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। দিনে একটা তরমুজ ক্ষুধা কমিয়ে দেওয়ার সঙ্গে মেদ জমতেও দেবে না।
লেবু : লেবুতে আছে ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড। যা ওবেসিটির পরিমাণ কমায়।
আঙুর : লাল আঙ্গুরে থাকা এলেজিয়াক এসিড শরীরের চর্বি বাড়তে বাধা দেয় ও নতুন করে চর্বি জমতে দেয় না। এছাড়া কালো আঙ্গুরে থাকা রেসভেরাট্রল শরীরে উপকারি ফ্যাট তৈরি করে ও খারাপ ধরণের ফ্যাট দূর করে।
পেয়ারা : পেয়ারায় আছে প্রচুর ভিটামিন-এ, বি, সি এবং প্রোটিন ও ফাইবার। এটি ক্ষুধা কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মালটা : এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি এবং ফাইবার আছে যা হজমে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
নারকেল : নারকেল যকৃতের বিপাক হার বাড়িয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে প্রকারান্তরে নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজন।
বেদানা : বেদানা দেহে লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের হার কমায়। ক্ষুধার হার কমায়। ফলে দেহে বাড়তি মেদ জমার সম্ভাবনা থাকে শূণ্য।
পেঁপে : পেঁপে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। রক্তে শর্করা ওবেসিটির লক্ষণ।
কমলালেবু : কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণে পানি, ভিটামিন ও ফাইবার থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নাশপাতি : এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং ভিটামিন সি রয়েছে। যা শরীরে জমা অতিরিক্ত চর্বি কাটতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমাতে নিত্য দিনের খাদ্য তালিকায় নাশপাতি ফল রাখতে পারেন।
স্ট্রবেরি : এই ফলটি ওজন কমাতে বেশ কার্যকর। এক কাপ স্ট্রবেরিতে মাত্র ৫০ গ্রাম ক্যালরি, ৭ গ্রাম টিনি ও ৩ গ্রাম ফাইবার রয়েছে।
শসা : শসার মধ্যে যে পানি থাকে তা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে অনেকটা অদৃশ্য ঝাটার মতো কাজ করে। নিয়মিত শসা খাওয়ায় কিডনিতে সৃষ্ট পাথরও গলে যায়। এছাড়া আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কলা : অনেকেই মনে করেন কলা খেলে নাকি ওজন বাড়ে। কিন্তু প্রতিদিন ছোট দুইটি কলা কিংবা বড় একটি কলা খেতে পারেন। এতে মোটা হবেন না।
জাম্বুরা : সহজলভ্য এই ফলটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কিউই ফল : এতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ফাইবার যা ব্লাড স্যুগার ও কলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে এবং ওজন কমাতে সক্রিয় ভুমিকা পালন করে।
অ্যাপ্রিকট : লো ক্যালরি এবং ভিটামিন এ ও সি তে সমৃদ্ধ অ্যাপ্রিকট বাড়তি মেদ কমিয়ে ফেলে খুব সহজেই।
নিজের বাড়তি মেদ থেকে মুক্তির আশায় বাজারজাতকৃত পণ্যের ধরাশায়ী না হয়ে বরং ফল খান এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন।