যে ১০ টা কারণে অবশ্যই ফল খেতে হবে

ফল খাওয়ার উপকারিতাগুলো যেকোন বয়সের যে কারোর জন্যে দারুণ। একদম ছোট শিশু থেকে শুরু করে, কিশোর-তরুণ, প্রাপ্তবয়স্ক এমনকি বৃদ্ধদেরও নিয়মিতভাবে ফল খাওয়া উচিৎ এবং প্রতিদিন কিছু পরিমাণে হলেও ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিৎ।

একদম তাজা ফল সকাল অথবা বিকেলের নাস্তা হিসেবে, অথবা দুপুরে কিংবা রাতের মিষ্টি খাবার হিসেবে কিন্তু দারুণ মুখরোচক। প্রায় সব ধরণের ফলের স্বাদই মিষ্টি এবং কোন রকম ঝামেলা কিংবা প্রস্তুতির ঝামেলা ছাড়াই ঝটপট করে খেয়ে নিতে পারবেন আপনি। বিকেলে খিদে পেয়েছে? একটি আপেল, একটি কলা, কয়েকটি আঙ্গুর এবং যদি চান সাথে মিশিয়ে নিতে পারেন অল্প একটু মধু। ব্যস, আপনার ঝটপট এবং মজাদার বিকেলের নাস্তা এক্কেবারে তৈরি! ছোট এক বাটি এমন ফল অথবা ফলের সালাদ খেতে যেমন দারুণ, আপনার শরীরের জন্যেও কিন্তু সেটি দারুণ উপকারী।

আধুনিক এই সময়ে সকলেই ব্যস্ত এবং প্রয়োজনের খাতিরেই বাইরের ভাজাপোড়া ধরণের খাবার বেশী খেয়ে থাকেন। একদম ছোট শিশুরাও আজকাল বাইরের বিভিন্ন রকম মুখরোচক খাবারের প্রতি বেশি আগ্রহী এবং তারা প্রতিদিনই সেসব খাবার খেতে চায়। কিন্তু, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের সেই সকল মুখরোচক এবং দৃষ্টিনন্দন খাবার শরীরের জন্যে ক্ষতিকর তো বটেই, তার সাথে সেই সকল খাবারে নেই কোন পুষ্টিগুণ। বাইরের এই সকল খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে কৃত্রিম রঙ, ফ্লেভার, চিনি এবং অবশ্যই অনেক বেশী পরিমাণে ক্যালরি! যেকোন বয়সের মানুষের জন্যেই এই সকল প্রসেসড খাবার খাওয়া ভয়বহ রকম ক্ষতিকর।

অথচ আমরা কিন্তু নিত্যদিন এই সকল খাবারই খাচ্ছি এবং বাচ্চাদেরও খাওয়াচ্ছি! যার ফলাফল কিন্তু আমাদের সামনেই। অর্থাৎ, অল্প বয়সেই হৃদপিন্ডের সমস্যা, ডায়বেটিস কিংবা উচ্চরক্তচাপের মতো রোগগুলো এসে দানা বাঁধতে শুরু করে দিচ্ছে আমাদের শরীরে।

দ্যা সেন্টার ফর ডিসিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর পরিসংখ্যান এর ফলাফল আমাদের জন্যে খুবই ভীতিকর! এই পরিসংখ্যান এর গবেষণা মতে, ২০৫০ সাল নাগাদ প্রতি তিনজনের একজন মানুষ ডায়বেটিসে ভুগবে! ভাবুন তো একবার এই ব্যাপারটি।

তাই নিজের ভালোটি নিজেকেই বুঝতে হবে এবং এই মুহূর্ত থেকে সেইভাবে কাজ করা শুরু করতে হবে। প্রতিদিনের সকাল নাস্তায় অথবা বিকেলের আড্ডায় অন্যান্য খাবার এর পাশাপাশি ফল অবশ্যই রাখুন। রাতে খাবারের পর ডেজার্ট হিসেবে অস্বাস্থ্যকর মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার না খেয়ে মিষ্টি কোন একটি ফল খেয়ে ফেলুন কারণ, অনেক মুখরোচক খাবারই বিভিন্ন রকম অস্বাস্থ্যকর উপাদান দিয়ে তৈরি। বরং প্রকৃতির দান চমৎকার সকল ফল একদম সুস্বাস্থ্যে ভরপুর। আপনার স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারী সকল উপাদান আছে এতে।

নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, কেনো আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল রাখাটা আপনার জনের জন্যে দরকার! এরই সাথে জেনে নিন ফল খাওয়ার দারুণ কিছু উপকারিতা-

১/ অনেক বেশী পরিমাণে ফল খেলে আপনার শরীরে খুব সহজেই রোগ দানা বাধতে পারবে না।

২/ ফল আপনার স্বাস্থ্য এবং আপনাকে শক্তিশালী করে তোলে।

৩/ প্রায় সকল ফলেই থাকে পানি, যা আপনার ত্বককে সুস্থ এবং নরম রাখতে সাহায্য করে থাকে।

৪/ প্রতিটি ফলে থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিপরীতে কাজ করে থাকে।

৫/ ফলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ যা শরীরে মেদ জমতে বাঁধা দেয়, ফলে আপনি খুব সহজেই মোটা হবেন না। এরই সাথে ফাইবার কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

৬/ ফল আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম ভিটামিন এবং মিনারেল এর ঘাটতি পূরণ করে থাকে।

৭/ ফল নিয়মিতভাবে খাওয়ার ফলে আপনাকে স্বাস্থ্যকর এবং দারুণ দেখাবে।

৮/ ব্রেইনের কার্যকারীতা বৃদ্ধিতেও ফল কাজ করে থাকে।

৯/ যেহেতু ফল সম্পুর্ণই একটি প্রাকৃতিক উপাদান, তাই ফল খাওয়ার ফলে আপনি অনেক বেশী এনার্জি পাবেন এবং সুস্থ অনুভব করবেন।

১০/ বাইরের আজেবাজে খাবার খেলে দুই দিন পরপরই আমাদের পেটের নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে থাকে। তবে ফল আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে বলে আপনি থাকবেন পেটের সমস্যা মুক্ত।

স্বাস্থ্য আপনার তাই খেয়ালটাও রাখতে হবে আপনাকেই। মুখরোচক এবং দৃষ্টিনন্দন খাবারের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেকে অসুস্থ বানিয়ে ফেলাটা খুব একটা বুদ্ধিমানের মতো কাজ নয়। বরং চেষ্টা করুন, প্রতিদিন কিছু পরিমাণে হলেও ফল খেতে, যা আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

My Rewards